গ্রাম পুলিশের প্রত্যেক সদস্যদের যে কোন নাম বা উপাধিতে সম্বোধন করা হোক না কেন তারা স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) অধ্যাদেশ ১৯৮৩ এর তফসিল-১ এর ২য় অংশে বর্ণিত ক্ষমতা প্রয়োগ করবেন এবং কর্তব্য পালন করবেন। গ্রাম পুলিশের ক্ষমতাও কর্তব্য নিমণরম্নপঃ
১। তিনি দিনে ও রাতে পাহারা ও টহলদারী করবেন।
২। অপরাধের সংগে সংশিস্নষ্ট সকল বিষয় অনুসন্ধান ও দমন করবেন এবং অপরাধীদের প্রেফতার করতে
সাধ্যমত পুলিশকে সহায়তা করবেন।
৩। চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন পরিষদকে সরকারী দায়িতব পালনে সহায়তা করবেন।
৪। অন্য নির্দেশ না থাকলে প্রতি পনেরো দিন অমত্মর এলাকার অবস্থা সম্পর্কে সংশিস্নষ্ট থানা-ভারপ্রাপ্ত
কর্মকর্তাকে অবহিত করবেন।
৫। ইউনিয়নের খারাপ চরিত্রের লোকদের গতিবিধি লক্ষ্য করবেন এবং মাঝে মাঝে থানার ভারপ্রাপ্ত
কর্মকর্তাকে অবহিত করবেন।
৬। ইউনিয়নে লুকিয়ে থাকা কোন ব্যক্তি, যার জীবন ধারণের জন্য প্রকাশ্য কোন আয় নেই বা যে তার নিজের
পরিচয় সম্পর্কে সন্তোষজনক কোন জবাব দিতে পারে না, এমন লোক সম্পর্কে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার
নিকট রিপোর্ট প্রদান করবেন।
৭। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে সে সকল বিষয় সম্পর্কে অবহিত করবেন, যা বিরোধ, দাংগা-হাংগামা বা তুমুল
কলহ সৃষ্টি করতে এবং জনগণের শান্তি বিঘ্নিত করতে পারে।
৮। ইউনিয়নে নিম্নলিখিত অপরাধ সংগঠন বা সম্পাদনের অভিপ্রায় সম্পর্কে কোন তথ্য অবহিত হলে তা
অনতিবিলম্বে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে অবহিত করবেন, যেমন-
(ক) দাংগা-হাংগামা,
(খ) গোপনে মৃতদেহ সরিয়ে জনম সংক্রামত্ম তথ্য গোপন করা,
(গ) কোন শিশুকে বাড়ি হতে বের করে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়া,
(ঘ) আগুনের সাহায্যে সংঘটিত ক্ষতি,
(ঙ) বিষ প্রয়োগ গবাদি পশুর অনিষ্ট বা ক্ষতি করা,
(চ) নরহত্যা বা আত্মহত্যার প্রচেষ্টা এবং উপরে উলেস্নখিত অপরাধ সংঘটন বা অপরাধ সংঘটন করার প্রচেষ্টা।
৯। উপরে উলেস্নখিত অনুচ্ছেদে বর্ণিত অপরাধ অথবা আদালতে প্রহণযোগ্য যে কোন অপরাধ বন্ধ করতে বা বন্ধ
করার উদ্দেশ্যে মধ্যস্থতা করার ক্ষেত্রে যথাসাথ্য চেষ্টা করবেন।
১০। জনম ও মৃত্যু রেজিস্টার সংরক্ষণ এবং এলাকার সব জনম ও মুত্যু সম্পর্কে ইউনিয়ন পরিষদকে অবহিত
করবেন।
১১। মানুষ বা পশু ফসলের মধ্যে কোন মহামারী বা সংক্রামক রোগ বা পোকার আক্রমন ব্যাপক আকারে দেখা
দিলে তৎক্ষণাৎ ইউনিয়ন পরিষদকে এ সম্পর্কে অবহিত করবেন।
১২। কোন বাঁধে বা সেচে ক্ষতি বা ত্রম্নটি দেখা দিলে অনতিবিলম্বে ইউনিয়ন পরিষদকে অবহিত করবেন।
১৩। সরকারি কাজের উদ্দেশ্যে যে কোন স্থানীয় তথ্য সরবরাহ করবেন।
১৪। খাজনা অথবা ভূমি উন্নয়ন কর, স্থানীয় কর, ফি বা অন্য পাওনা সংগ্রহ ও আদায়ে তিনি রাজস্ব কর্মচারীদের
সহায়তা করবেন।
১৫। অধ্যাদেশ অধীনে কোন অপরাধ সংঘটন বা সংঘটেনর অভিপ্রায় সম্পর্কে জ্ঞাত হলে বা জানতে পারলে তা
ইউনিয়ন পরিষদকে অবহিতত করবেন।
১৬। ইউনিয়ন পরিষদের বা ইউনিয়ন পরিষদের অধিকারে ন্যসত্ম কোন স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তির ক্ষতি সাধান
বা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি বা অন্যায় দখল সম্পর্কে তিনি অবিলম্বে ইউনিযন পরিষদকে অবহিত এবং ধরেনর ক্ষতি,
প্রতিবন্ধকতা বা অন্যায় দখল রোধ করার জন্য মধ্যস্থতা করতে পারবেন।
১৭। ইউনিয়ন পরিষদের নির্দেশে কোন বাসিন্দার আবাসস্থল ও সম্পত্তির উপর পরোয়ানা জারি করতে পারবেন।
১৮। গ্রাম পুলিশ ম্যাজিষ্টেটের আদেশ ও ওয়ারেন্ট বা গ্রেপ্তারী পরোয়ানা ছাড়াই নিমণলিখিত ক্ষেত্রে গ্রেফতার
করতে পারবেনঃ
(ক) আমলযোগ্য অপরাধের সাথে জড়িত কোন ব্যক্তি বা যার বিরম্নদ্ধে যথার্থ অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছে
বা বিশ্বাসযোগ তথ্য পাওয়া গেছে বা কোন অপরাধমূলক কাজের সহিত জড়িত থাকার যুক্তিসংগত কারণ
রয়েছে।
(খ) বৈধ কারণ ছাড়াই কোন ব্যক্তির কাছে ঘর ভাংগার সরঞ্জাম পাওয়া গেলে।
(গ) সরকারের কোন আদেশ বলে বা ১৮৯৮ সালের ফৌজদারী কার্যবিধির (১৮৯৮ সালের ৫নং আইন) অধীন
কোন ব্যক্তিকে যদি অপরাধী ঘোষণা করা হয়।
(ঘ) যে কোন ব্যক্তি যার অধিকারে এমন সকল দ্রব্য বা মাল রয়েছে যা চোরাই মাল বলে সন্দেহ করার যথার্থ
কারণ রয়েছে বা এ মাল দেখে সে কোন অপরাধ সংঘটনের সাথে জড়িত আছে বলে যথার্থভাবে সন্দেহ হলে।
(ঙ) বৈধ হেফাজত বা তত্ত্ববধানে হতে কোন ব্যক্তি পালিয়ে গেলে বা পালাবার চেষ্টা করলে।
(চ) কোন ব্যক্তি কোন সরকারি কর্মচারীকে তার সরকারি দায়িতব পালনে বাধা দিলে।
(ছ) এমন কোন ব্যক্তি যাকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌ-বাহিনী বা বিমান বাহিনীর পলাতক সৈনিক বলে
যথার্থভাবে সন্দেহ হলে।
(জ) মুক্তিপ্রাপ্ত কোন অপরাধী ১৮৯৮ সালের ফৌজদারী কার্যবিধির (১৮৯৮ সালের ৫নং আইন ৫৬৫ ধারায়)
(৩) উপধারার কোন বিধান ভংগ করলে।
১৯। সাধারণ লোক কোন ব্যক্তিকে বৈধভাবে গ্রেফতার করলে তিনি তাদের সাহায্য করবেন এবং দেরী না করে এ
ধরণের গ্রেফতার সম্পর্কে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে অবহিত করবেন।
২০। গ্রামে কর্মরত সরকারি কর্মচারী বা কোন সাধারণ লোক সাময়িক ভাবে বলবৎ কোন আইন বলে কোন
ব্যক্তিকে গ্রেফতার করলে তিনি তার দায়িতব গ্রহণ করবেন এবং তিনি যে ব্যক্তির বা ব্যক্তি বর্গের দায়িতব
গ্রহণ করেছেন বা তিনি নিজেই যে ব্যক্তি বা ব্যক্তিদের গ্রেফতার করেছেন তাদেরকে অনতিবিলম্বে থানার
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে হাজির করবেন। তবে শর্ত থাকে যে, রাতের অন্ধকারে কোন ব্যক্তি বা ব্যক্তিদের
গ্রেফতার করা হলে তাকে বা তাদেরকে গ্রামে বৈধ তত্তাবধানে রাখা যেতে পারে। কিন্তু পরদিন সকালে সম্ভাব্য
তাড়াতাড়ি সময়ে তাদেরকে থানায় হাজির করতে হবে।
২১। বিভিন্ন সময়ে আইন অনুযায়ী তার উপর অর্পিত দায়িতব পালন করবেন। উপরোক্ত কার্যাবলী ছাড়াও গ্রাম
পুলিশ এলাকার বিভিন্ন ধর্মীয়, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের সদস্য হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন
করেন।
এছাড়াও গ্রাম পুলিশ আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ দায়িতব পালন করে থাকেন যেমন-এলাকার কোন অস্বাভাবিক মৃত্যু হলে বা মার্ডার হলে লাশ পাহারা দেয়া এবং লাশ থানায় পৌঁছান পর্যমত্ম তার সংগে থাকা। থানার পুলিশ এলাকায় আসলে তাদের সর্বক্ষণের সাথী হওয়া। সরকারি কোন উচু পর্যায়ের কর্মকর্তা এলাকা পরিদর্শনে এলে তাঁকে সাবির্ক সাহায্য করা, কোর্টের মামলা মোকদ্দমার নোটিশ জারী এবং চেয়ারম্যান ও সদস্যদের আদেশানুসারে কাজ করা। গ্রাম পুলিশগণ বর্তমানে থানা পুলিশ ও ইউনিয়ন পরিষদের যৌথ নিয়ন্ত্রনে কাজ করে। প্রতি সপ্তাহে তাদেরকে থানায় এবং সময় সময় ইউনিয়ন পরিষদ অফিসেও হাজিরা দিতে হয়। গ্রাম আদালতের বিচারকালে তাদের উপস্থিত থাকতে হয়। এমনিভাবে দেখা যায়, গ্রাম পুলিশগণ বিভিন্ন দায়িতব পালন করে আসছেন।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস